বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (Reddit)-এ মুসলিম নারী ও নারী সহপাঠীদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য ও বিকৃত আচরণের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে বুয়েটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, সম্প্রতি এক বুয়েট শিক্ষার্থী সামাজিক মাধ্যমে একাধিক ফেইক আইডি থেকে নারী সহপাঠীদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, অনুচিত কন্টেন্ট ও বিকৃত মন্তব্য প্রকাশ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
যোগাযোগমাধ্যম রেডিটে সহপাঠীকে ধর্ষণ, বোরকা, হিজাব ও নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে। একাধিক শিক্ষার্থী বিষয়টি রেডিট থেকে শনাক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটিকে জানায়।
পরবর্তীতে, বুয়েট ২০ ব্যাচের এক সিনিয়র শিক্ষার্থী মুহাম্মদ রাফি ফেসবুকে একটি পোস্টে ঘটনাটি তুলে ধরেন। তিনি দাবি করেন, সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত শিক্ষার্থী বুয়েটের ইইই বিভাগের শ্রীশান্ত রায় এবং অভিযোগের পেছনে থাকা কিছু ক্লু বা ইঙ্গিত তার সাথে মিলে যায়।
এক সহপাঠী বলেন, “আমরা প্রথমে বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারিনি। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক পোস্ট ও স্ক্রিনশট দেখে বিষয়টি তদন্তের দাবি তুলেছি।”
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ার পর শিক্ষার্থীরা সংশ্লিষ্ট ছাত্রকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয় বলে জানা গেছে। তবে তিনি বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট কোনো জবাব দেননি বলে সহপাঠীদের অভিযোগ।
ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যেন দ্রুত অভিযোগের সত্যতা যাচাই ও তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করে, যাতে কেউ অন্যায়ভাবে অভিযুক্ত না হয় এবং দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যায়। এ ঘটনায় ধর্ষকের বিচারের দাবিতে বুয়েট ছাত্রকল্যাণ পরিদপ্তরের সামনে আন্দোলন করছে বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে আন্দোলন শুরু করে তারা।
বিক্ষোভকারীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রাতেই অভিযুক্ত সেই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, বুয়েট ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী শ্রীশান্ত রায়ের বিরুদ্ধে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।