জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তে জানা গেছে, এই হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল প্রায় এক মাস আগে, ২৫ সেপ্টেম্বর।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আটক দুই আসামি মাহির রহমান ও ছাত্রী বার্জিস শাবনাম বর্ষাকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের সময় হত্যার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে।
ওসি বলেন, “গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে বর্ষা তার সাবেক প্রেমিক মাহিরকে জানায়, জুবায়েদকে আর ভালো লাগে না। এরপর তারা দু’জন মিলে জুবায়েদকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। ২৫ সেপ্টেম্বর তারা হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় এবং দু’টি সুইচ গিয়ার চাকু ক্রয় করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী দুই দিক থেকে আক্রমণের কথা ছিল।”
তিনি আরও জানান, পরিকল্পনা অনুযায়ী গত রবিবার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে টিউশন পড়াতে যাওয়ার আগে আরমানিটোলার নূরবক্স রোডের রৌশান ভিলায় বর্ষার বাসার সিঁড়িতে জুবায়েদকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। হত্যার মূলহোতা মাহির রহমান, আর তার সহযোগী ছিল ফারদিন আহম্মেদ আয়লান। ঘটনার আগে বর্ষা জুবায়েদের অবস্থান ও চলাফেরার তথ্য মাহিরকে জানিয়ে সহায়তা করে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার দিয়ে জুবায়েদের গলার ডান পাশে আঘাত করা হয়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। নিহত জুবায়েদ হোসাইন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং ছাত্রদল নেতা ছিলেন।
ঘটনার পর রাতেই পুলিশ বর্ষাকে আটক করে। পরদিন সোমবার (২০ অক্টোবর) মাহির রহমান ও তার সহযোগী ফারদিন আহম্মেদ আয়লানকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনজনই হত্যার দায় স্বীকার করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বংশাল থানার ওসি আরও জানান, “এই হত্যাকাণ্ড ছিল পূর্বপরিকল্পিত। প্রেমঘটিত সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকেই এই হত্যার সূচনা। তদন্ত চলছে, ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”