দেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স পদ্ধতিতে আসছে আমূল পরিবর্তন। এবার থেকে কোনো চালক লাইসেন্স পেতে হলে তাকে ন্যূনতম ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করতে হবে। সেই সঙ্গে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানের ক্ষমতা আর থাকবে না বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) হাতে। সরকার দক্ষ ও প্রশিক্ষিত চালক তৈরির লক্ষ্যে এই যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বুধবার সকালে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর হাতিরঝিলের সড়ক ভবন মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
লাইসেন্স পেতে বাধ্যতামূলক হবে ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ
উপদেষ্টা বলেন, “ড্রাইভিং লাইসেন্স পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনা হচ্ছে। লাইসেন্সের আগে প্রশিক্ষণ হবে মূল বিষয়। আর এজন্য ৬০ ঘণ্টার বাধ্যতামূলক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। প্রশিক্ষণের সময় প্রশিক্ষণ ভাতাও দেওয়া হবে।”
উপদেষ্টা জানান, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছাড়াও সরকার মনোনীত বেসরকারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে এই প্রশিক্ষণ নিতে হবে। আর সেসব প্রতিষ্ঠান থেকেই দেওয়া হবে ড্রাইভিং লাইসেন্স।
সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতেই নতুন নীতি
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, “সড়ককে নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখতে হলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক থাকা অত্যন্ত জরুরি। তাই আমরা প্রশিক্ষণ ছাড়া আর কাউকে লাইসেন্স দেব না।”
তিনি জানান, চালকদের জন্য দুই ধরণের প্রশিক্ষণ থাকবে—একটি তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ, যেখানে সড়ক আইন, ট্রাফিক সাইন, এবং নিরাপত্তা নির্দেশনা শেখানো হবে; অন্যটি প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ, যেখানে বাস্তবে গাড়ি চালানো, নিয়ন্ত্রণ করা এবং শারীরিক সক্ষমতা যাচাই করা হবে। এছাড়া লাইসেন্স পেতে হলে ডোপ টেস্ট ও শারীরিক সক্ষমতা পরীক্ষাও বাধ্যতামূলক করা হবে।
উপদেষ্টা আরও বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি আগামী মাসের মধ্যেই এই নতুন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করতে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখশ চৌধুরী।
এছাড়া উপস্থিত ছিলেন সেতু সচিব মো. আবদুর রউফ, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ মঈনুল হাসান, বিআরটিএ চেয়ারম্যান আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহমেদ, এবং ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও পরিবহন খাতের প্রতিনিধিরা।












Comments are closed